Sunday, August 23, 2020

পথ কুকুরকে পিষে দেওয়ার ঘটনায় প্রতিবাদে সরব হলেন টুইঙ্কল খান্না

পথ কুকুরকে পিষে দেওয়ার ঘটনায় প্রতিবাদে সরব হলেন টুইঙ্কল খান্না

পশু বসুন্ধরা, মুম্বই, মহারাষ্ট্র, ২৪/০৮/২০২০ : পাঞ্জাবের একটি রাস্তায় এক পথ কুকুরকে ইচ্ছাকৃতভাবে একটি গাড়ি চাপা দিয়ে চলে যাওয়ার ঘটনায় প্রাতিবাদে সরব  হলেন প্রাক্তন অভিনেত্রী টুইঙ্কল খান্না। 

কিছুদিন আগেই পাঞ্জাবের একটি রাস্তায় শুয়েছিল একটি পথ কুকুর। রাস্তার ধারে  দাঁড়িয়েছিল একটি গাড়ি । চালক গাড়িতে উঠেই সামনে শুয়ে থাকা পথ কুকুরটিকে ইচ্ছাকৃতভাবেই পিষে দিয়ে চলে যায়। যন্ত্রনায় চিৎকার করে উঠে কোনো ক্রমে পালাবার চেষ্টা করে ওই কুকুরটি। পুরো ঘটনাটি সিসিটিভিতে উঠে যায় এবং সেই ভিডিও ফুটেজ ক্রমেই ভাইরাল হতে থাকে। নেটিজেনরা প্রতিবাদে গর্জে ওঠেন। 

এই ঘটনা নিয়েই টুইঙ্কল খান্না বিজেপি নেত্রী পশুপ্রেমী মানেকা গান্ধীকে ট্যাগ করে টুইট করেন। টুইঙ্কল লেখেন, "ওই পিশাচরূপী চালককে গ্রেপ্তার করা উচিত। কিভাবে কেউ ঘুমন্ত পশুর ওপর দিয়ে গাড়ি চালিয়ে দিতে পারে ! ওই চালকের উপযুক্ত শাস্তি হাওয়া উচিত।" প্রাক্তন অভিনেত্রীর কথায় শুধু নয়, শোনা যাচ্ছে মানেকা গান্ধী দেশের বিভিন্ন পশুপ্রেমী সংগঠন থেকে অভিযোগ পেয়েও ব্যবস্থা নিতে চলেছেন। জানা  গিয়েছে, ওই চালক নিজে একজন ডগ ব্রিডার। কিন্তু দেশের পশু প্রেমীরা সেকথা মানতে নারাজ, তাঁদের বক্তব্য, 'যে ডগ ব্রিডার হবে, সে কখনোই কোনো কুকুরকে এভাবে পিষে দিয়ে চলে যেতে পারে না'।

পশু নির্যাতনের করলে কঠোর আইন আনছে কেন্দ্র সরকার

পশু নির্যাতনের করলে কঠোর আইন আনছে কেন্দ্র সরকার

পশু বসুন্ধরা, ২৪/০৮/২০২০ : পশুদের ওপর এক শ্রেণীর মানুষের নির্মম অত্যাচার ক্রমেই মাত্রা ছাড়িয়েছে আমাদের দেশে। এবার পশু নির্যাতন নিয়ে কঠোর আইন আনতে চলেছে কেন্দ্র সরকার।

এক শ্রেণীর মানুষ পশুদের ওপর নির্যাতন চালিয়ে পৈশাচিক  আনন্দ পায়। আর সেই কারণেই কোথাও পথ কুকুরদের বিষ দিয়ে মেরে ফেলা হচ্ছে, কোথাও বা তাদের লেজে কালি পটকা লাগিয়ে জ্বালিয়ে দেওয়া হচ্ছে। কোথাও গরম জল ঢেলে দেওয়া হচ্ছে, আবার কোথাও বা এসিড দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। আমাদের দেশে প্রতিটা শহরে পথ কুকুরদের গাড়ির চাকার তলায় মৃত্যুর  ঘটনা অহরহ ঘটছে, এই ঘটনা সংখ্যা দিয়ে গুনে শেষ করা যাবে না।

শুধু পথ কুকুর নয়, বন্য পশুদেরকেও অত্যাচারের মুখে পড়তে হচ্ছে। কিছুদিন আগে কেরালাতেই একের পর এক হাতির মৃত্যু হয়েছে এক ধরনের মানুষের নির্যাতনের শিকার হয়ে। কর্নাটকে গরুর মৃত্যু হয়েছে বনশূকরকে ফাঁদ  হিসেবে রেখে যাওয়া বোমা খেয়ে ফেলে। দেশের অভয়ারণ্যগুলিতেও দৌরাত্ম বেড়েছে চোরাশিকারিদের। এছাড়াও অরণ্য ছেড়ে লোকালয়ের কাছাকাছি বেরিয়ে আসার অপরাধে বন্য পশুদের নির্মম অত্যাচারের মুখে পড়তে হচ্ছে হামেশাই।

কিন্তু কেন পশুদের ওপর মানুষের এত অত্যাচার ? তার অন্যতম প্রধান কারন হল আমাদের দেশে পশু নির্যাতনের জন্যে তেমন কোনো কঠোর আইন নেই। পশুপ্রেমীরা দীর্ঘদিন ধরেই আন্দোলন করে আসছেন এই বিষয়টি নিয়ে। তাঁরা এই আইন আরও কঠোর করার দাবী জানিয়ে আসছেন। কিন্তু পশু নির্যাতন নিয়ে দেশের যে আইন রয়েছে, তা এতই দুর্বল,  সেটা এতদিন কারোরই নজরে আসেনি। 

আমাদের দেশে পশু নির্যাতন নিয়ে যে আইন আছে, সেটি হল সংবিধানের ১১(১) ধারা। যাকে বলা  হয় Protection to Animal Cruelty Act 1960 (PCA). এই আইনটি তৈরি হয়েছিল ১৯৬০ সালে। যে আইনের বলে পশুদের ওপর অত্যাচার  করলেও মাত্র ১০ থেকে ৫০ টাকা জরিমানা দিলেই পার পাওয়া যায়। এই আইনটিই এখনো বলবৎ রয়েছে। গত ৬০ বছর ধরে এই আইনটিকে সংশোধন করার কথা মনেই হয় নি আমাদের দেশের আইন প্রণেতাদের। যার ফলে, এতদিন ধরে পশুদের ওপর নির্যাতন করেও দিব্যি পার পেয়ে যায় এক শ্রেনীর মানুষ। এর সাথেও আছে আর একটা কারন, আর সেটা হল শিক্ষা ও সচেতনতার অভাব।

এবার কিন্তু আইন প্রণেতারা নড়েচড়ে বসেছেন। পশু নির্যাতনের এই আইনকে সংশোধন করার ব্যাপারে উদ্যোগী হয়েছেন দেশের আইন প্রণেতারা। দেশের সোশ্যাল জাস্টিস এন্ড এমপাওয়ারমেন্ট মন্ত্রী থাওয়ারচাঁদ গেহলট সহ মোট ১২ জন এমপি লিখিতভাবে আবেদন জানিয়েছেন দেশের পশুসম্পদ ও ডেয়ারি মন্ত্রী গিরিরাজ সিংহকে। ওই ১২ জন এমপির মধ্যে  রয়েছেন বিজু জনতা দলের সাংসদ  অনুভব মোহান্তি, কংগ্রেসের সংসদ মহম্মদ জাভেদ ও বিবেক তানখা। গিরিরাজ সিংহ নিজে এই বিষয়টিকে যথেষ্ট গুরুত্ত্ব নিয়ে দেখছেন, তিনি মন্তব্য করেছেন, "গত ৬ দশক ধরে এই আইনটিকে কঠোর করার কথা আগে কেন কোনো আইন প্রণেতা ভেবে দেখলেন না ! এই আইনটিকে অবশ্যই সংস্কার করা উচিত, এবং তা দ্রুত করা হবে।"

তবে এ কথা ঠিক, লোকসভার সদ্দস্য হয়েই তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ মিমি চক্রবর্তী একবার সংসদে এই ধরনের দাবী তুললেও সেবার তাঁর বক্তব্য সেভাবে গুরুত্ত্ব পায় নি। কিন্তু এবার এই আইন সংশোধিত হতে চলেছে। তবে সার্কাসে যে সব পশুদেরকে এখনো ব্যবহার করা হচ্ছে, সে ব্যাপারে গিরিরাজ সিংহ কোনো কথা বলেন নি। কেননা সেই ব্যাপারটা আদালতে বিচারাধীন রয়েছে।