Sunday, May 31, 2020

লক ডাউনের দিনগুলোয় নিজের পোষা কুকুরদেরকে রাস্তায় বের করে দিয়েছেন অনেকেই

দেশের খবর

পশু বসুন্ধরা, পুনে, মহারাষ্ট্র, ০১/০৬/২০২০ : কুকুরদের থেকে করোনা ভাইরাস ছড়ায় না। বার বার এই কথা জানিয়েছে দেশ বিদেশের বিজ্ঞানী ও চিকিৎসকেরা। তা সত্ত্বেও অহেতুক ভ্রান্ত ধারণা পোষন করে লক ডাউনের দিনগুলোয় নিজের পোষা কুকুরদেরকে রাস্তায় বের করে দিয়েছেন অনেকেই।
মহারাষ্ট্রের পুনেতে কর্মা ফাউন্ডেশনের প্রিয়া কায়লাডের তেমনটাই অভিজ্ঞতা হয়েছে। কুকুররা করোনা ভাইরাস ছড়ায় না। তাদের থেকে সংক্রমণের কোনো ভয় নেই। এই কথা জোর দিয়েই বলেছেন দেশ বিদেশের বিজ্ঞানী ও চিকিৎসকেরা। এই বিষয়ে পশুপ্রেমী মানেকা গান্ধীও একটি বিবৃতি প্রকাশ করেছিলেন। কিন্তু কিছু কুকুর মালিক ভ্রান্ত ধারণার বশবর্তী হয়ে লক ডাউনের সময় তাদের পোষ্যকে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে। খাবার আর পানীয় জল না পেয়ে সেই কুকুরদের অবস্থা খুব খারাপ হয়ে গিয়েছিল।
কর্মা ফাউন্ডেশনের প্রিয়া জানালেন, "আমরা লক ডাউনের সময় এরকম অন্তত ২০টি কুকুরকে উদ্ধার করেছি। তার মধ্যে একটি সেন্ট বার্নাড প্রজাতির কুকুরও ছিল। প্রত্যেকটি কুকুরকেই অবশ্য আমরা এডপ্ট করাতে পেরেছি। তারাও নতুন আশ্রয় এবং পরিবার পেয়েছে। কিন্তু এই কুকুরগুলির শারীরিক অবস্থা ভাল ছিল না। আমরা প্রত্যেকটি কুকুরকে চিকিৎসা দিতে পেরেছি।"
প্রিয়া জানালেন, "লক ডাউন চলাকালীন আমরা দেড় লক্ষ কুকুর এবং বিড়ালদের খাবার দিতে পেরেছি। যে সব গরু রাস্তায় ঘুরে বেড়ায় এবং যেগুলি অস্থায়ী আশ্রয়ে থাকে, তাদের জন্যে আমরা ১১,০০০ কিলো খাবারের আয়োজন করতে পেরেছি। মাথেরন অঞ্চলে বেশ কিছু পরিত্যক্ত ঘোড়া দেখতে পাওয়া যায়, ওদেরকে আমরা মোট ৫,০০০ কিলো খাবার দিতে পেরেছি। ওদেরকে খাওয়ানোর জন্যে আমাদের প্রত্যন্ত গ্রামেও যেতে হয়েছে।"

পথ কুকুরকে খাবার দেওয়ার জন্যে মার, চীনা মহিলার অভিযোগে গ্রেপ্তার আততায়ী

হচ্ছেটা কি
)
পশু বসুন্ধরা , গ্রেটার নয়ডা, উত্তর প্রদেশ, ৩১/০৫/২০২০ : পথ সারমেয়কে খাবার খাওয়ানো নিয়ে বচসা থেকে মারপিট। এক চীনা  মহিলার অভিযোগে আততায়ী ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করল পুলিশ।
গ্রেটার নয়ডার বেটা-২ এলাকায় এটিএস গ্রীন প্যারাডাইস সোসাইটি আবাসনে  থাকেন এক চীনা মহিলা। তিনি প্রতিদিন নিয়ম করে এলাকার পথ সারমেয়দের খাবার দেন। মে মাসের ২৫ তারিখেও তিনি খাবার দিচ্ছিলেন কুকুরদের। ওই আবাসনের এক ব্যক্তি কুকুরদের খাবার দেওয়া নিয়ে ওই চীনা মহিলাকে প্রথমে কটূক্তি করলে ওই মহিলা প্রতিবাদ করেন। এরপরেই দুজনের মধ্যে তুমুল বচসা শুরু হয়ে যায়। এর পর ওই ব্যক্তি চীনা মহিলাকে বেদম প্রহার করেন বলে অভিযোগ।
নিগৃহীত চীনা মহিলা একটুও দেরি না করে পুলিশে অভিযোগ জানান। বিষয়টি পৌঁছে যায় ডেপুটি কমিশনার অফ পুলিশ (মহিলা সুরক্ষা) বৃন্দা শুক্লার কাছে। তিনি নিজে তদন্ত করে ওই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেন। আততায়ী ব্যক্তির বিরুদ্ধে অনেকগুলি ধারায় মামলা করা হয়েছে। চীনা  মহিলার মেডিকেল রিপোর্টেও উল্লেখ রয়েছে ওই ব্যক্তির মারে তিনি  জখম হয়েছিলেন।
পশ্চিমবঙ্গেও এই ধরনের ঘটনা হামেশাই ঘটে থাকে। যে সব পশুপ্রেমীরা পথ সারমেয়দের খাবার খেতে দেন, যাঁরা বিভিন্ন অসুবিধাকেও উপেক্ষা করে লক ডাউনের দিনগুলোতে এক টানা এই পথ সারমেয়াদের খাবার দিয়ে এসেছেন, তাঁদের হামেশাই এই ধরনের আক্রমনের সামনে পড়তে হয়। কখনো হুমকি, কখনো প্রহার আবার কখনো হয়ত নোংরা আক্রমন। তবু কর্তব্যে অবিচল থেকে এই পশু প্রেমীরা দিনের পর দিন শত বাধা অতিক্রম করেও পথ কুকুরদের খাবার দিয়ে চলেছেন বিনা স্বার্থে। 
আসলে আমাদের দেশে এই পথ কুকুরদের ওপর আক্রমন করলে তেমন কোনো কঠোর আইন নেই, যাতে আততায়ী কড়া শাস্তি পেতে পারে। খুব কম অঙ্কের জরিমানা দিয়ে তারা সহজেই জামিন পেয়ে যায়, আর এর ফলেই পথ কুকুরদের ওপর অত্যাচার দিনের পর দিন বেড়েই চলেছে। পশুপ্রেমীরা দীর্ঘদিন ধরে এই বিষয়টি নিয়ে আন্দোলন করে চলেছেন, কিন্তু আইন যাঁরা প্রণয়ন করেন, তাঁদেরকে বোধ হয় এখনো অনুপ্রাণিত করা যায় নি।