Thursday, December 17, 2020

উটির বনপথে উজ্জ্বল রং-এর ট্রেন বন্ধ করার দাবী উঠল

উটির বনপথে উজ্জ্বল রং-এর ট্রেন বন্ধ করার দাবী উঠল


পশু বসুন্ধরা, ১৮/১২/২০২০ : দক্ষিণ ভারতে নীলগিরি মাউন্টেন রেলওয়ের একটি বিশেষ ট্রেনকে নিয়ে ব্যাপক বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে শুধুমাত্র ট্রেনের বাইরের গায়ের রং-এর জন্যে। শুধুমাত্র এই কারণেই সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে রেল কর্তৃপক্ষকে।  আপাতত এই ট্রেনের সংখ্যা কমিয়ে আনা হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে।

নীলগিরি মাউন্টেন রেলের উটি যাওয়ার একটি ট্রেন পরিচালনা করে 'প্রাইভেট প্লেয়ার্স' নামে একটি সংস্থা। উটির ট্রেনটির গায়ে এর আগে কালচে নীল রং ছিল, কিন্তু সম্প্রতি সেই রং-এ কিছুটা পরিবর্তন করে উজ্জ্বল নীল রং লাগানো হয়েছে এবং তার সাথে কম্বিনেশন করে উজ্জ্বল গেরুয়া রং লাগানো হয়েছে। নতুন রং এ রাঙ্গিয়ে ট্রেনগুলির যাত্রা শুরুও হয়ে গিয়েছে পর্যটনকেন্দ্র উটির অভিমুখে।

কিন্তু গোল বেঁধেছে এখানেই। বনদপ্তর এবং কয়েকটি পশুপ্রেমী সংস্থা ওই ট্রেনের নতুন রং এর সমালোচনা করে জানিয়েছে, 'ওই ট্রেনগুলিকে রীতিমত উজ্জ্বল রং  দিয়ে নতুন করে রাঙানো হয়েছে। অথচ ওই ট্রেন তার যাত্রাপথের মধ্যে ৪০ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে ঘন অরণ্যের মধ্যে দিয়ে। যে অরণ্যে ঘুরে বেড়ায় হাতির দল এবং অন্যান্য পশুরা। ট্রেনের ওই উজ্জ্বল রঙ বন্য পশুদের আকর্ষণ করতে পারে। তাদেরকে উস্কে দিলে তারা ট্রেনকে আক্রমন করে বসতে  পারে। তাতে যাত্রীদের আহত হওয়ার সম্ভাবনা অনেকটাই বেড়ে যাচ্ছে। তাছাড়া এভাৱে বন্য পশুদের নিয়ম করে বার বার অশান্ত করে তোলা উচিত নয়।'

বন্  দপ্তরের তরফ থেকেও জানানো হয়েছে 'ওয়াইল্ড লাইফের একটা নিয়ম রয়েছে, ঘন অরণ্যের মধ্যে উজ্জ্বল রং-এর কোনো কিছুই থাকা উচিত নয়, উজ্জ্বল রং -এর উপস্থিতি বন্য পশুকে আকর্ষণ করতে পারে এবং তাদেরকে ক্ষেপিয়ে তুলতে পারে'। আপাতত উটির অভিমুখে উজ্জ্বল রংওলা ওই ট্রেনের সংখ্যা কমিয়ে আনা হয়েছে। তবে শনি  ও রবিবার ওই ট্রেন চালানো হচ্ছে। সপ্তাহের অন্যান্য কম ট্রেন চালানো হচ্ছে।

তড়িদাহত হয়ে আসামে অন্তঃসত্ত্বা হাতির মর্মান্তিক মৃত্যু

তড়িদাহত হয়ে আসামে অন্তঃসত্ত্বা হাতির মর্মান্তিক মৃত্যু


পশু বসুন্ধরা , ১৮/১২/২০২০ :  বৈদ্যুতিক তারের সংস্পর্শে এসে ফের এক পূর্ণবয়স্ক হস্তিনীর মর্মান্তিক মৃত্যু হল আসামে। বন  দপ্তরের কর্মীরা জানিয়েছেন  হস্তিনীটি  অন্তসত্বা ছিল।

হাতিমৃত্যুর এই ঘটনাটি ঘটেছে আসামের চিরাং জেলার শিকাঝোড়া গ্রামে। বনের খুব কাছাকাছি অবস্থিত গ্রামটি। হস্তিনীটি অরণ্যের ধারের ওই গ্রামের খুব কাহ্হাকছি চলে এসেছিল এবং গ্রামের সীমান্তে লাগিয়ে রাখা বিদ্যুতের তারের সংগসর্ষে চলে এসে তড়িদাহত হয়েছিল বলে জানা গিয়েছে। তড়িদাহত হয়ে নিমেষে ছিটকে পড়ে যায় সে। এর কিছুক্ষণ পরেই মারা যায় হাতিটি। 

আমাদের দেশে অরণ্যের গাঁ ঘেঁষে অসংখ্য গ্রাম গড়ে উঠেছে। বহু ক্ষেত্রে অরণ্য কেটে গ্রাম বা জনপদ গড়ে উঠেছে, এতে  অরণ্যের পরিসর ক্রমেই ছোট হয়ে এসেছে, যার ফলে দ্রুত খাবারের ভান্ডার কমতে শুরু করেছে অরণ্যে ভিতরে। এই কারনে খাবারের সন্ধানে বন্য পশুরা অরণ্য ছেড়ে বেরিয়ে পড়ছে। তারা  গ্রামগুলোতে হানা দিচ্ছে খাবারের জন্যে। যার ফলে মানুষ ও বন্য পশুর মধ্যে বাড়ছে সংঘাত। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই প্রাণ যাচ্ছে পশুদের।

আসাম বন্ দপ্তরের তরফ থেকে জানানো হয়েছে গত আগস্ট মাস থেকে এই অঞ্চলে মোট ৬টি হাতির মৃত্যু হল বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে। এবার যে হাতিটির মৃত্যু হল তার বয়স প্রায় ২০ বছর, সে অন্তঃসত্ত্বা ছিল। এই বিষয়টি নিয়ে বন দপ্তর বিদ্যুৎদপ্তরের সাথে কথা বার্তা বলেছে এবং স্থানীয়দের মধ্যে লিফলেট বিলি করে সতর্ক করে বলেছে এই ধরনের ঘটনা ঘটার আগেই যাতে বন দপ্তরকে খবর দেওয়া হয়। বন দপ্তরের বক্তব্য, তাদের কাছে যদি আগাম খবর থাকত যে গ্রামের কাছাকাছি হাতি এসে পড়েছে, তাহলে তারা হাতিটিকে ফের অরণ্যের দিকে তাড়িয়ে নিয়ে যেতে পারত।

Tuesday, December 1, 2020

ছোট ছোট পশুদের প্রাণ বাঁচাতে উত্তরাখণ্ডে তৈরি হল প্রথম ইকো ফ্রেন্ডলি সেতু

ছোট ছোট পশুদের প্রাণ বাঁচাতে উত্তরাখণ্ডে তৈরি হল প্রথম ইকো ফ্রেন্ডলি সেতু


পশু বসুন্ধরা, দেরাদুন, উত্তরাখন্ড, ০১/১২/২০২০ :  উত্তরাখণ্ডের রামনগর ফরেস্ট ডিভিশন তৈরি করল রাজ্যের প্রথম ইকো ফ্রেন্ডলি সেতু, যে সেতু দিয়ে নির্বিঘ্নে পার হয়ে যেতে পারবে ছোট ছোট পশুরা।

উত্তরাখণ্ডের কালডুঙ্গি জাতীয় সড়ক চলে গিয়েছে গভীর অরণ্যের বুক চিরে। প্রতি বছর এই সড়কের ওপর রাস্তা পার করতে গিয়ে গাড়ির চাকায় পিষ্ট হয়ে প্রাণ যায় অরণ্যের ছোট ছোট পশুদের। তাই তাদের প্রাণ রক্ষা করার জন্যেই রামনগর ফরেস্ট ডিভিশন একটা ইকো ফ্রেন্ডলি সেতু বানিয়ে দিল। যে সেতু ধরে সাপ, খরগোশ, গোসাপ  বা এইরকম ছোট ছোট পশুরা অনায়াসে পথ পার করে একদিক থেকে আর একদিকে চলে যেতে পারবে। 



ইকো ফ্রেন্ডলি এই সেতুর দৈর্ঘ্য ৯০ ফুট এবং চওড়ায় ৫ ফুট। সেতুটি তৈরি করা হয়েছে বাঁশ, দড়ি ও ঘাস দিয়ে। যাতে সহজেই এই সেতু ধরেই রাস্তা পারাপার করতে পশুদের কোনোরকম .অসুবিধা না হয়। ভারতের প্রায় সব অরণ্যের মধ্যে দিয়েই চলে গিয়েছে সড়কপথ আর সেইসব সড়কপথ ধরে দ্রুতবেগে চলে যায় গাড়ি। এই ধরনের ইকো ফ্রেন্ডলি সেতু যদি বাধ্যতামূলকভাবে অন্যান্য অরণ্যেও করে দেওয়া হয়, তাহলে প্রতি বছর প্রচুর পরিমাণে বন্য পশুর প্রাণ বাঁচবে, রক্ষা পাবে দেশের অরণ্য সম্পদ।